স্বদেশ ডেস্ক:
প্রায় চার বছর আগে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ বালুচর ওরিয়েন্টাল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহাগকে অপহরণের পর হত্যা মামলায় ইয়াসিন মাহমুদ শাহীন ওরফে জুকার শাহীন (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি শাহীনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টার জন্য দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় আরও সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। দণ্ডিত শাহীন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন মীরেরবাগ বড় মসজিদ এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি শাহীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সোহাগের বাবা ইদ্রীস খান বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করবো, উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে। আসামির দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হবে।’
মামলার অভিযোগ থেকে যায়, ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সোহাগ স্কুল থেকে এসে তার মা সুফি বেগমের মোবাইল নিয়ে গেমস খেলতে খেলতে বাসার বাইরে যায়। এসময় কৌশলে শাহীন সোহাগকে অপরহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সোহাগের পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এক ঘণ্টার মধ্যে টাকা না দিলে সোহাগকে মেরে ফেলার হুমকি দেন শাহিন। সোহাগের পরিবার বিষয়টি র্যাবকে জানায়। র্যাব বিষয়টি থানাকে জানাতে বলে। এরই মাঝে আরও ২/৩ বার টাকা চেয়ে ফোন দেয় শাহিন। পরে থানা পুলিশ মোবাইল টেকনোলজির সহায়তায় শাহিনকে মীরেরবাগ বালুর মাঠ থেকে গ্রেপ্তার করে।
পরে স্বীকারোক্তি মতে তার বাসার খাটের নিচ থেকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাত, নাক, মুখ, স্কচটেপ দিয়ে বাঁধা সোহাগকে উদ্ধার করে পুলিশ। চার্জশিটে বলা হয়, ব্যবসায় ধরা খেয়ে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য সে সোহাগকে অপহরণ করে।
এ ঘটনায় ওই দিনই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন সোহাগের বাবা। মামলাটি তদন্ত করে শাহিন এবং তার বন্ধু সাজ্জাদ আহমেদ নিশাদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাব-ইন্সপেক্টর আশরাফুল আলম। এরপর সাজ্জাদকে অব্যাহতি দিয়ে শাহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।